মহাবিশ্বের কবে মৃত্যু হবে?

Date:

শেয়ারঃ

তাপীয় মৃত্যু (Heat Death)‌

মহাবিশ্ব চিরতরে প্রসারিত হতে থাকবে এবং সকল পদার্থ শেষ পর্যন্ত শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে, যাকে বলে ‘তাপীয় মৃত্যু’। এই অবস্থায়, মহাবিশ্বের সমস্ত নক্ষত্র তাদের জ্বালানি শেষ করে ফেলবে। বেশিরভাগ নক্ষত্র শ্বেত বামন বা নিউট্রন তারা হিসাবে থেকে যাবে। সবচেয়ে বড় নক্ষত্রগুলো কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হবে। স্টিফেন হকিংয়ের তত্ত্ব অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বরগুলো হকিং রেডিয়েশন নামে একটি বিশেষ ধরনের বিকিরণ নির্গত করে, যা ধীরে ধীরে তাদের ভর কমিয়ে ফেলবে। প্রায় ১০১০০ বছর পর (১ এর পরে ১০০টি শূন্য) সব কৃষ্ণগহ্বর বাষ্পীভূত হয়ে যাবে এবং শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয় শক্তি অবশিষ্ট থাকবে।

মহাবিশ্বের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একদিন গোটা মহাবিশ্বকে পুনরায় একত্রিত করতে শুরু করবে। এই প্রদ্ধতি একটি বিপরীত বিগ ব্যাংয়ের মতো হবে যা গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের সাথে সংঘর্ষ হবে, তারপর নক্ষত্র আর গ্রহ একত্রিত হবে এবং শেষ পর্যন্ত সমগ্র মহাবিশ্ব একটি অসীম ঘনত্বে ফিরে যাবে। মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে কাজ করা একটি রহস্যময় শক্তি হলো বিগ রিপ। সবকিছুকে টুকরো টুকরো করে ছিন্ন করে দেবে। মহাবিশ্বের প্রসারণ এমন গতিতে চলে যাবে, যে দূরবর্তী গ্যালাক্সিগুলো আমাদের থেকে এত দ্রুত দূরে সরে যাবে এবং তাদের আলো আর দেখা যাবে না। এরকম ভাবে গ্রহগুলো, পরমাণুগুলো, তারপর মহাবিশ্ব নিজেই শেষ হয়ে যাবে।

কোনটি ঘটবে?

বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত না যে কোনটা হতে চলেছে। তার কারণ ডার্ক এনার্জির ধারণা স্পষ্ট হয়নি, যখন ডার্ক এনার্জির স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে তখন মহাবিশ্বের শেষ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায়, হিগস বোসন যা অন্যান্য কণাদের ভর দেয়, একদিন সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। ২০১২ সালে হিগস বোসন আবিষ্কৃত হয়েছিল, যার ভর প্রোটনের চেয়ে প্রায় ১২৬ গুণ বেশি। তবে তাত্ত্বিকভাবে, এই ভর পরিবর্তন হতে পারে। মহাবিশ্ব বর্তমানে তার সর্বনিম্ন শক্তির অবস্থায় নেই, বরং এটি একটি অস্থিতিশীল ‘মিথ্যা শূন্যতা’ অবস্থায় থাকতে পারে। যদি হিগস বোসন কোনোভাবে একটি নিম্ন ভরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাহলে মহাবিশ্ব একটি নিম্ন শক্তির “সত্যিকারের শূন্যতা” অবস্থায় চলে যাবে।

mehrab360
mehrab360https://www.mehrab360.com
হোসাইন হাওলাদার, mehrab360.com এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য, বিশ্লেষণ ও হালনাগাদ কনটেন্ট নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে জটিল প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সহজভাবে তুলে ধরা। বিশ্বের প্রযুক্তি জগতের সর্বশেষ আপডেট, রিভিউ ও ব্যাখ্যামূলক কনটেন্ট পড়তে পারবেন। Email: info@mehrab360.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিজ্ঞাপনspot_img

এই সম্পর্কে আরো পড়ুন

চাঁদ তৈরি হলো কিভাবে?

চাঁদ কিভাবে তৈরি হয়েছিল?চাঁদ কী দিয়ে তৈরি? চাঁদ আমাদের অতি পরিচিত এবং একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ যা সর্বদা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ...

মহাবিশ্ব এক সময় বিলীন হয়ে যাবেই!

'মহাবিশ্ব একসময় বিলীন হয়ে যাবে' কথাটি শুনলে সবারই চমকে যাওয়ার কথা। সম্প্রীতি গবেষণায় উঠে এসেছে যে মহাবিশ্ব এক...

চাঁদের দুই পাশে ভিন্নতার রহস্য গবেষণায় মিলল

🌕 চাঁদের দুই পৃষ্ঠের ভিন্নতার রহস্য উদঘাটন করল নাসার গবেষণানাসার GRAIL (Gravity Recovery and Interior Laboratory) মিশনের তথ্য...

মহাবিশ্বের রহস্য ভেদ করতে নিউট্রিনোর পেছনে ছুটছে বিজ্ঞান

দূরবর্তী দক্ষিণ ডাকোটার গভীরে, একটি পরিত্যক্ত সোনার খনির নিচে শুরু হয়েছে এক বৈপ্লবিক বৈজ্ঞানিক অভিযান। লক্ষ্য—মহাবিশ্বের অস্তিত্বের মূল...