তাপীয় মৃত্যু (Heat Death)
মহাবিশ্ব চিরতরে প্রসারিত হতে থাকবে এবং সকল পদার্থ শেষ পর্যন্ত শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে, যাকে বলে ‘তাপীয় মৃত্যু’। এই অবস্থায়, মহাবিশ্বের সমস্ত নক্ষত্র তাদের জ্বালানি শেষ করে ফেলবে। বেশিরভাগ নক্ষত্র শ্বেত বামন বা নিউট্রন তারা হিসাবে থেকে যাবে। সবচেয়ে বড় নক্ষত্রগুলো কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হবে। স্টিফেন হকিংয়ের তত্ত্ব অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বরগুলো হকিং রেডিয়েশন নামে একটি বিশেষ ধরনের বিকিরণ নির্গত করে, যা ধীরে ধীরে তাদের ভর কমিয়ে ফেলবে। প্রায় ১০১০০ বছর পর (১ এর পরে ১০০টি শূন্য) সব কৃষ্ণগহ্বর বাষ্পীভূত হয়ে যাবে এবং শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয় শক্তি অবশিষ্ট থাকবে।
মহাবিশ্বের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একদিন গোটা মহাবিশ্বকে পুনরায় একত্রিত করতে শুরু করবে। এই প্রদ্ধতি একটি বিপরীত বিগ ব্যাংয়ের মতো হবে যা গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের সাথে সংঘর্ষ হবে, তারপর নক্ষত্র আর গ্রহ একত্রিত হবে এবং শেষ পর্যন্ত সমগ্র মহাবিশ্ব একটি অসীম ঘনত্বে ফিরে যাবে। মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে কাজ করা একটি রহস্যময় শক্তি হলো বিগ রিপ। সবকিছুকে টুকরো টুকরো করে ছিন্ন করে দেবে। মহাবিশ্বের প্রসারণ এমন গতিতে চলে যাবে, যে দূরবর্তী গ্যালাক্সিগুলো আমাদের থেকে এত দ্রুত দূরে সরে যাবে এবং তাদের আলো আর দেখা যাবে না। এরকম ভাবে গ্রহগুলো, পরমাণুগুলো, তারপর মহাবিশ্ব নিজেই শেষ হয়ে যাবে।
Table of Contents

কোনটি ঘটবে?
বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত না যে কোনটা হতে চলেছে। তার কারণ ডার্ক এনার্জির ধারণা স্পষ্ট হয়নি, যখন ডার্ক এনার্জির স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে তখন মহাবিশ্বের শেষ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায়, হিগস বোসন যা অন্যান্য কণাদের ভর দেয়, একদিন সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। ২০১২ সালে হিগস বোসন আবিষ্কৃত হয়েছিল, যার ভর প্রোটনের চেয়ে প্রায় ১২৬ গুণ বেশি। তবে তাত্ত্বিকভাবে, এই ভর পরিবর্তন হতে পারে। মহাবিশ্ব বর্তমানে তার সর্বনিম্ন শক্তির অবস্থায় নেই, বরং এটি একটি অস্থিতিশীল ‘মিথ্যা শূন্যতা’ অবস্থায় থাকতে পারে। যদি হিগস বোসন কোনোভাবে একটি নিম্ন ভরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাহলে মহাবিশ্ব একটি নিম্ন শক্তির “সত্যিকারের শূন্যতা” অবস্থায় চলে যাবে।