আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য মানুষ অনেক কিছু করছে। তাদের অভ্যাসকে করছে ভয়ানক। প্রাচীনকালের মানুষ অনেক পরিশ্রম করতো। এখনের মানুষ বিলাসীতার জন্য খারাপ অভ্যাস গড়ে তুলছে। এর মধ্যে মস্তিষ্ক এই খারাপ অভ্যাসের স্বীকার। মস্তিষ্ককে ক্ষতিকর যে কয়েকটি অভ্যাস যেমনঃ
(toc) #title=(বিষয়বস্তু সারণি)
১. অপর্যাপ্ত ঘুম
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে মানব মস্তিষ্কে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানব জীবন গতিশীল। ব্যস্ততা থাকার কারণে মানুষ ঠিক ভাবে ঘুমানোর কথা ভুলে যায়। পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম বলতে ২৪ ঘণ্টায় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমকে বোঝানো হয়। এক্ষেত্রে রাতে নিরবচ্ছিন্ন ঘুম সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ঘুমানোর সময় মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেয়ার পাশাপাশি, বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে।
২. সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়া
ব্যস্ততার কারণে লোকজন সকালে খাওয়ার কথা ভুলে যায়। সকালের খাবার খাওয়া থেকে সবাই এড়িয়ে যায়। প্রায় ৬০% লোক এই কাজটি করে। সকালে উঠে খাওয়ার একটা মনোভাব তাদের ভিতরে কাজ করে না। কেননা সকালে ক্ষুধা একটু কমই লাগে। টই খারাপ অভ্যাস পরিহার করে সুন্দর জীবন গড়তে হবে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায় এবং প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কে। যার কারণে সহজ কাজ করতে কঠিন মনে হয়।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান না করা
মস্তিষ্কে প্রায় ৭৫% ই পানি। মস্তিষ্ককে ভেজা রাখতে পানি পান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপর্যাপ্ত পানিপানের ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো শুকিয়ে যায়। এতে করে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। প্রতিদিন অত্যন্ত ২ লিটার পানি পান করতে হবে।
৪. অতিরিক্ত চাপ এবং শুয়ে বসে থাকা
বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কে চাপ নিয়ে জীবন যাপন করা একটি খারাপ অভ্যাস। অনেকেই ইচ্ছা করে মস্তিষ্কের উপর চাপ দেয় যে কাজটি করেই ফেলি, কেননা সব কাজতো করেই ফেলেছি। অতিরিক্ত চাপের ভিতর থাকলে, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সাহসিকতার পরিচয় দেখাতে গিয়ে আপনার মস্তিষ্কে ক্ষতি হচ্ছে সেটি আপনি বোঝতেও পারবেন না। গবেষকদের মতে, যারা কাজের ব্যাপারে ভীষণ সজাগ, অন্যের সাহায্য নিতে ভরসা পান না। আবার যারা ‘না’ বলতে পারেন না তারা সবচেয়ে বেশি মানুষকে চাপে ভোগেন। অনেকেই আবার বসে বসে কাজ করেন। বসে থাকার ফলে মস্তিষ্ক ভারী হয়ে যাবে, কোন কাজে মন বসে না। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন আধাঘন্টা করে হাঁটতে হবে। বাইরের বাতাস আপনার মনকে সতেজ করবে।
৫. গুগল সার্চ
প্রাচীন কালে মানুষ ক্যালকুলেটর ছাড়া হিসাব নিকাশ করত। অনেক নাম্বার মুখস্ত করে ফেলত। এখনকার সময়ে মানুষ গুগলে সার্চ দেয়। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে এখানে লিখে দেয়। এতে করে তাদের মস্তিষ্কে মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রয়োজন গুগলে সার্চ না দিয়ে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
(getCard) #type=(post) #title=(আপনার দরকার হতে পারে)
৬. হেডফোন ব্যবহার, উচ্চ শব্দে জোরে গান শোনা
আপনি যে হেডফোন বা এয়ারপড ব্যবহার করছেন সেটা ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে শ্রবণশক্তির ক্ষতি করতে পারে। সেইসাথে জোরে জোরে গান শুনলে কিংবা উচ্চ শব্দের মধ্যে থাকলে শ্রবণের মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং ভয়ের বিষয় হল শ্রবণশক্তিকে একবার যে ক্ষতি হয় সেটা আর ঠিক করা যায় না। আর শ্রবণশক্তি কমে গেলে এর সরাসরি প্রভাব মস্তিষ্কে গিয়ে পড়ে।
৭. একা একা থাকা, সামাজিক না হওয়া
মানুষের সাথে কথা বলা, আড্ডা দেয়া, এক কথায় সামাজিকীকরণ আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি। খুব বেশি সময় একা একা সময় কাটানো আপনার মস্তিষ্কে ঠিক ততটাই খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে যেমনটা পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হয়। সামাজিকীকরণের ফলে আমাদের মস্তিষ্ক উদ্দীপ্ত থাকলে যা একা থাকলে হয় না।
৮. নেতিবাচক চিন্তা ও মানুষ
আপনার যদি প্রতিনিয়ত নেতিবাচক চিন্তার অভ্যাস থাকে, আপনাকে দিয়ে কিছুই হবে না, বিশ্বের অবস্থা খুব খারাপ, ভবিষ্যৎ অন্ধকার, আপনি অভাগা, এমন নেগেটিভ চিন্তার ক্ষতিকর প্রভাব মস্তিষ্কে গিয়ে পড়ে। কেননা নেতিবাচক চিন্তা করার ফলে একদিকে যেমন মানসিক চাপ, হতাশা বেড়ে যায়।
৯. অন্ধকারে সময় কাটানো
যারা অন্ধকারে বেশি সময় কাটান। কিংবা দীর্ঘসময় এমন কোন আবদ্ধ স্থানে থাকেন যেখানে তেমন আলো বাতাস চলাচল করে না, এমন পরিবেশ মস্তিষ্কের ওপর ভীষণ চাপ তৈরি করে। কারণ আমাদের মস্তিষ্কের জন্য সূর্যের আলোর সংস্পর্শ পাওয়া বেশ জরুরি।
১০. খাদ্যাভ্যাস
অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস, সেটা স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। গবেষণা দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ধমনীগুলোতে কোলেস্টেরল জমে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। জাঙ্ক ফুড, ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয় ইত্যাদি খেলেও মস্তিষ্ক একই ধরণের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এজন্য পরিমিত ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস খুব জরুরি।
(full-width)