২,৯০০ বছর আগে সৈন্যরা নদী পারাপারে ছাগলে চামড়া ব্যবহারের সন্ধান

Date:

শেয়ারঃ

এ্যাসিরিয়ান সৈন্যরা নদী সাঁতার কাটার জন্য ছাগলের চামড়া ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।নিমরুদে পাওয়া একটি খোদাই করা দেওয়ালে এ্যাসিরিয়ান সৈন্যদের নদী সাঁতার কাটতে এবং ভাসমান ছাগলের চামড়া ব্যবহার করে ভাসমান অবস্থায় দেখানো হয়েছে।

খ্রিস্টপূর্ব ৮৬৫ থেকে ৮৬০ সালের মধ্যে তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমান ইরাকের প্রাচীন এ্যাসিরিয়ান সাম্রাজ্যের একটি প্রধান শহর নিমরুদের এই খোদাই করা। কিন্তু দেয়ালের প্যানেলে আসলে একটি সেনাবাহিনীকে নদী পার হতে দেখা যাচ্ছে এবং সৈন্যরা প্রাচীন ভাসমান যন্ত্রের সাহায্যে ঢেউয়ের উপর দিয়ে চলাচল করছে।

সংগৃহীত

১৮৪০ এর দশকে উত্তর-পশ্চিম প্রাসাদ থেকে খনন করা বেশ কয়েকটি জিপসাম প্যানেলের মধ্যে একটি, যা রাজা দ্বিতীয় আশুরণাসিরপালের নির্দেশে ৮৬৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে টাইগ্রিস নদীর তীরে নির্মিত হয়েছিল। মূলত সিংহাসন কক্ষ এবং রাজকীয় অ্যাপার্টমেন্টের অভ্যন্তরীণ দেয়ালের চারপাশে অবস্থিত, খোদাই করা প্যানেলগুলোতে রাজাকে সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়ার, আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার এবং প্রাণী শিকার করার চিত্র দেখানো হয়েছে।

ব্রিটিশ মিউজিয়ামের সংগ্রহে থাকা এই প্যানেলের টুকরোটিতে বেশ কয়েকজন পুরুষ এবং ঘোড়াকে নদী পার হতে দেখা যাচ্ছে। ঘোড়াগুলো সাঁতার কাটছে, অশ্বারোহী সৈন্যরা তাদের টেনে ধরে রেখেছে। একজন সৈনিক মুক্তভাবে সাঁতার কাটছে, একজন ছোট নৌকা চালাচ্ছে, এবং দুজন ছাগলের চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার করছে যা সৈন্যরা ভেসে থাকার জন্য ফুলিয়ে দিচ্ছে।

প্যানেলের উপরের অংশে একটি কিউনিফর্ম শিলালিপি রয়েছে যা রাজার বংশধারার চিহ্ন এবং তার মূল কৃতিত্বের বর্ণনা দেয়। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মতে , দৃষ্টিকোণের দ্বিমাত্রিকতা – যেখানে ছবিগুলো সম্পূর্ণ এবং অর্ধ-নিমজ্জিত নয়, এ্যাসিরিয়ান শিল্পে সাধারণ।

আরো পড়ুনঃ অগ্নিশিখার রহস্যঃ অক্সিজেনের আবিষ্কার

নিমরুদের দেয়ালের প্যানেলে পশুর চামড়া বা মূত্রাশয়ের ভাসমান অংশ বেশ কয়েকবার দেখা যায় এবং সম্ভবত এগুলো ছাগল বা শূকর দিয়ে তৈরি ছিল। ভাসমান অংশগুলো একজন সৈনিকের অস্ত্র শুকিয়ে রাখতে এবং সেনাবাহিনীকে শত্রুর উপর আক্রমণ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো। দ্বিতীয় আশুরনাসিরপাল তার সামরিক দক্ষতার পাশাপাশি তার বর্বরতার জন্যও পরিচিত ছিলেন এবং তার উদ্ভাবনী কৌশল, ছাগলের চামড়ার ভাসমান অংশসহ তাকে খ্রিস্টপূর্ব নবম শতাব্দীতে তার সাম্রাজ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করতে সাহায্য করেছিল।

যদিও এটা ভাবা খবই আশ্চর্যজনক যে এ্যাসিরিয়ান সেনাবাহিনী যদি স্কুবা গিয়ার পেত তাহলে তারা পৃথিবীর কতটা অংশ জয় করতে পারত, তবুও ছাগলের ছাল এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার যা তাদের শতাব্দী ধরে মেসোপটেমিয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করেছিল, যতক্ষণ না খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।

সূত্রঃ livescience.com

mehrab360
mehrab360https://www.mehrab360.com
হোসাইন হাওলাদার, mehrab360.com এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য, বিশ্লেষণ ও হালনাগাদ কনটেন্ট নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে জটিল প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সহজভাবে তুলে ধরা। বিশ্বের প্রযুক্তি জগতের সর্বশেষ আপডেট, রিভিউ ও ব্যাখ্যামূলক কনটেন্ট পড়তে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিজ্ঞাপনspot_img

এই সম্পর্কে আরো পড়ুন

অগ্নিশিখার রহস্যঃ অক্সিজেনের আবিষ্কার

আমরা যে প্রতি মুহূর্তে শ্বাস নিই, সেই বাতাসটা আসলে কী দিয়ে তৈরি? আবার ধরুন, মোমবাতি বা চুলার আগুন...

পানামা খাল কেন তৈরি করা হয়েছিল?

ধরুন আপনি একজন নাবিক, বিশাল সমুদ্রযাত্রায় বের হয়েছেন। পাড়ি দিতে হবে আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর। কিন্তু সামনে এক...

গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রাণীরা এত রঙিন কেন?

গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বনজঙ্গল, নদী ও সমুদ্রের পানির নিচে থাকা প্রাণীগুলোকে দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। এদের শরীরজুড়ে থাকে লাল,...

মস্তিষ্কের কোষ কোন বয়সে বাড়ে?

বিকাশিত মানুষের মস্তিষ্ক যখন গর্ভে তখন কোটি কোটি নিউরন অর্জন করে এবং শৈশবে আরও কিছু নিউরনকে কাজে লাগায়।...