
আপনি জানেন কি! ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ৭৫% পানি হলেও মিঠাপানির উৎস খুব সামান্য। বেশিরভাগ পানি পানযোগ্য নয়। পৃথিবীর মোট পানির মাত্র এক ভাগ মানুষের ব্যবহার উপযোগী। মোট পানির শতকরা প্রায় ৯৭ ভাগই সমুদ্রের পানি। যে পানিতে অতি অল্প পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ দ্রবীভূত থাকে মিঠা পানি বলা যেতে পারে। আমরা যে পানি প্রতিদিন পান করে থাকি তার pH এর মান 6.5-8.5 সীমার মধ্যে থাকা উচিত। তবে মিঠাপানির pH মান 5.3-7.4 এর সীমার মধ্যে হয়। বিশুদ্ধ পানির pH এর মান 7।
চাষাবাদ ও মৎস চাষের জন্য মিঠা পানি খুবই উপযোগী। মোট পানির প্রায় 2% বরফ হিসেবে থাকে। ভূ-পৃষ্ঠে মিঠা পানির উৎসের মধ্যে 70% হিমবাহ অবস্থায় পানি থাকে। মৃদু পানির 0.86% আসে বরফ থেকে। এগুলো হিসাব করে দেখেই মনে হয় মিঠাপানির উৎস কতটা সামান্য।
প্রাকৃতিক পানির মধ্যে বৃষ্টির পানি সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধ মিঠা পানি। এক পশলা বৃষ্টির পরে বৃষ্টির পানি অপেক্ষাকৃত বিশুদ্ধ হয়। প্রকৃতপক্ষে বৃষ্টির পানিই পাতিত পানি। এই বৃষ্টির পানি প্রধানত নদীতে আসে। বৃষ্টির পানি, ঝরনার পানি, বরফ গলা পানি ভূপৃষ্ঠের উপর দিকে প্রবাহিত হয়ে এসে পড়ে জগতের জন্য খুবই উপযোগী।
এছাড়াও ভূগর্ভে মিঠাপানির 98% অবস্থান করে। বৃষ্টির পানি ও তুষার গলা পানি ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন সচ্ছিদ্র কঠিন পদার্থ যেমন মাটি, বালি, পাথর ইত্যাদি স্তর ভেদ করে ভূ-গর্ভে প্রবেশ করার সময় পরিশ্রুত হয়ে যখন কাদা, গ্রানাইট ইত্যাদি অভেদ্য স্তরে পৌঁছে, তখন তা জমা হয়ে থাকে।
এ পানির মধ্যে বিভিন্ন দ্রবণীয় লবণ যেমন পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি বেশ কিছু গ্যাসীয় উপাদান মেশানো থাকে। এই পানি আমরা অকারণে হয়ে অপচয় করি বিভিন্ন কাজে। কিন্তু একবারও ভাবি না যে মিঠা পানির উৎস খুবই সামান্য। তাই আমাদেরকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পানি চক্রের মাধ্যমে কতটুকুই বা পানি মিঠা পানিতে পরিণত হয়, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ অপানযোগ্য পানি সমুদ্র রয়েছে।