ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন কি?

Date:

শেয়ারঃ


ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এর বৈশিষ্ট্যঃ

১. এর আকার প্রায় একটি আমেরিকান ফুটবল মাঠের সমান।

২. এটি ঠিক পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে অবস্থিত, যেটাকে low earth orbit বা নিম্ন কক্ষপথ বলে। এজন্য এটিকে মাঝে মাঝে বুস্ট করতে হয়, না হলে এটি ধীরে ধীরে নিচের দিকে পড়ে বাতাসের সাথে যঘর্ষণে ধ্বংস হয়ে যাবে।

৩. ঘণ্টায় প্রায় ২৮.০০০ কিলোমিটার দ্রুতিতে ISS প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এটির গতিবেগ সর্বোচ্চ গতি সম্পন্ন বুলেট ট্রেনের চেয়েও প্রায় ৪৬ গুণ বেশি।

৪. ISS এর মোট ভর ৪০০,০০০ কেজির বেশি।

৫. একসাথে প্রায় ৬জন মহাকাশচারী এখানে থাকতে পারেন। এ পর্যন্ত মোট ২৭০ জনেরও বেশি মহাকাশচারী এই স্টেশনে গিয়েছেন।

৬. ISS এর বিভিন্ন মডিউলের সংযুক্তিকরণ, রক্ষণাবেক্ষণ, এবং পুনর্বিন্যাসের জন্য এপর্যন্ত ২৬০টিরও বেশি স্পেসওয়াক করা হয়েছে।
সংগৃহীত

বর্তমানে ৫টি সহযোগী স্পেস এজেন্সি এই ISS এর তত্ত্বাবধান করে।

এর মধ্যে আছে-

১. কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA)

২. ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA)

৩. জাপান অ্যারোস্পেস অ্যান্ড এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA)

৪. ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NASA)

৫. রাশিয়ার স্টেট স্পেস কর্পোরেশন (Roscosmos)

মহাকাশযানের বাইরে মহাকাশে শুধুমাত্র স্পেসস্যুট পড়ে কাজ করাকে স্পেসওয়াক বলে।

মহাকাশে তো আর আসলেই হেঁটে-বেড়ানো সম্ভব নয়, সেখানে তো রাস্তাঘাট নেই। তাই সেখানে সত্যিকারভাবে হেঁটে বেড়ানো সম্ভব নয়, সেখানে ভেসে বেড়ায় মূলত। এটার অপর নাম Extravehicular Activity (EVA). মহাকাশে স্পেস স্টেশনে একটি ওজনশূন্য পরিবেশ বিরাজ করে। বিজ্ঞানীদের অনেক ধরনের গবেষণা আছে, অভিকর্ষ বলের জন্য যেগুলো পৃথিবীর মাটিতে করা সম্ভব নয়। তাই সেগুলো মহাকাশে ওজনশূন্য পরিবেশে করা হয়।

তাই এটিকে Orbiting laboratory বলা হয়। এটার অনেক মডিউলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে, এমনকি Zarya মডিউলে ফাটল দেখা গিয়েছে। বাতাস লিক এর ঘটনাও ঘটেছে, যা মহাকাশচারীদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই নাসা অফিসিয়ালি ঘোষণা দিয়েছে যে ২০৩০ সালের পরে ISS ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পৃথিবীর দিকে পতনের সময় বায়ুমণ্ডলের সাথে ঘর্ষণে এর অনেকাংশ পুড়ে যাবে, এবং শেষ পর্যন্ত তা প্রশান্ত মহাসাগরে আছড়ে পড়বে। এভাবেই আমাদের চোখের অশ্রু ঝরিয়ে চিরবিদায় নিবে কিংবদন্তি এই স্পেস স্টেশন।
mehrab360
mehrab360https://www.mehrab360.com
হোসাইন হাওলাদার, mehrab360.com এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য, বিশ্লেষণ ও হালনাগাদ কনটেন্ট নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে জটিল প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সহজভাবে তুলে ধরা। বিশ্বের প্রযুক্তি জগতের সর্বশেষ আপডেট, রিভিউ ও ব্যাখ্যামূলক কনটেন্ট পড়তে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিজ্ঞাপনspot_img

এই সম্পর্কে আরো পড়ুন

প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের রঙিন ছবি!

রঙ একটি পছন্দনীয় জিনিস। পদার্থবিজ্ঞানে ভাষায় আলোর রঙ তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য দ্বারা নির্ধারিত হয়। তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি বা কম...

চীন-রাশিয়া চাঁদে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে!

২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একসাথে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে চীন ও রাশিয়া। চলতি মাসের শুরুর দিকে...

কৃষ্ণগহ্বর আসলে কতটা ভয়াবহ!

কৃষ্ণগহ্বর এমন এক জায়গা যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই শক্তিশালী যে, কোনও কিছুই এমনকি আলোও পড়তে পারে না। কৃষ্ণগহ্বরের...

মহাবিশ্ব অতিক্রম করার সময় কি আলো শক্তি হারায়?

আলো হলো তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ। একটি বৈদ্যুতিক তরঙ্গ এবং একটি চৌম্বক তরঙ্গ একত্রিত হয়ে স্থান-কালের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ...