চন্দ্র গ্রহণ হয় কেন?

Date:

শেয়ারঃ

চন্দ্র গ্রহণ একটি মহাজাগতিক ঘটনা, যা ঘটে তখন, যখন পৃথিবী, চাঁদ, এবং সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করে। এটি মূলত চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া পড়ার কারণে ঘটে। গ্রহণের সময় পৃথিবী সূর্য এবং চাঁদের মাঝখানে চলে আসে, ফলে সূর্যের আলো চাঁদে পৌঁছাতে পারে না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সূর্যের আলোকে ছড়িয়ে দেয় এবং কিছু অংশ চাঁদে পৌঁছায়, যার ফলে চাঁদ লালচে আভা ধারণ করে, যা “ব্লাড মুন” নামেও পরিচিত। চন্দ্র গ্রহণ দুই ধরণের হতে পারে—পূর্ণ গ্রহণ, যখন চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে, এবং খণ্ড গ্রহণ, যখন চাঁদের একাংশ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে।




এই ঘটনা দেখতে একাধারে বৈজ্ঞানিক এবং নান্দনিক। হাজার বছর ধরে এটি মানুষের মধ্যে কৌতূহল জাগিয়েছে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিশ্বাস ও কল্পনার জন্ম দিয়েছে। এটি প্রকৃতির একটি অসাধারণ প্রদর্শনী, যা আমাদের মহাবিশ্বের বিশালতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। চন্দ্র গ্রহণ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কোনো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না, এটি খালি চোখেই দেখা যায়, যা সাধারণ মানুষের জন্য এটি আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।


চন্দ্র গ্রহণ দুই ধরণের হয়ঃ পূর্ণ গ্রহণ এবং খণ্ড গ্রহণ। পূর্ণ গ্রহণের সময় চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে ঢুকে যায়, যা এক অনন্য এবং চমকপ্রদ দৃশ্য তৈরি করে। অন্যদিকে, খণ্ড গ্রহণে চাঁদের কেবল একটি অংশ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকে। এছাড়াও, একটি উপ-ছায়াগ্রহণ (penumbral eclipse) ঘটে, যখন চাঁদ পৃথিবীর বাইরের হালকা ছায়ার মধ্যে প্রবেশ করে, তবে এটি খালি চোখে খুব কমই স্পষ্ট হয়।

পৃথিবীর ছায়া পড়ে বলে চন্দ্রগ্রহণ। পৃথিবীর ছায়া চাঁদের সমস্তটা আবৃত করলে বলা হয় পূর্ণগ্রাস, আর কিছু অংশ ঢাকলে খন্ডগ্রাস। খন্ডগ্রাস লোকের মনে পূর্ণগ্রাসের মতো দাগ কাটে না। চাঁদ তো সরু কাস্তের মতো প্রায়ই দর্শন দেয়, তাই খণ্ডগ্রাসে অস্বাভাবিক কিছু নেই।{alertSuccess} 


{getContinue} $button={পড়তে থাকুন}

বিজ্ঞানীদের জন্য চন্দ্র গ্রহণ মহাকাশ গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এই সময়ে চাঁদের পৃষ্ঠে সূর্যের আলো কিভাবে প্রতিফলিত হয় এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা বিশ্লেষণ করা সম্ভব। এছাড়া এটি সৌরজগতের বিভিন্ন গতিবিধি বুঝতে সাহায্য করে। আধুনিক যুগে মানুষ এই মহাজাগতিক ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানলেও, এর সৌন্দর্য আজও সবাইকে মুগ্ধ করে। এক আকাশে ঝুলন্ত লালচে চাঁদ যেন আমাদের মহাবিশ্বের বিশালতা এবং এর অসীম রহস্যের কথা মনে করিয়ে দেয়।
mehrab360
mehrab360https://www.mehrab360.com
হোসাইন হাওলাদার, mehrab360.com এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য, বিশ্লেষণ ও হালনাগাদ কনটেন্ট নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করে। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে জটিল প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সহজভাবে তুলে ধরা। বিশ্বের প্রযুক্তি জগতের সর্বশেষ আপডেট, রিভিউ ও ব্যাখ্যামূলক কনটেন্ট পড়তে পারবেন। Email: info@mehrab360.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিজ্ঞাপনspot_img

এই সম্পর্কে আরো পড়ুন

প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের রঙিন ছবি!

রঙ একটি পছন্দনীয় জিনিস। পদার্থবিজ্ঞানে ভাষায় আলোর রঙ তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য দ্বারা নির্ধারিত হয়। তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি বা কম...

চীন-রাশিয়া চাঁদে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে!

২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একসাথে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে চীন ও রাশিয়া। চলতি মাসের শুরুর দিকে...

কৃষ্ণগহ্বর আসলে কতটা ভয়াবহ!

কৃষ্ণগহ্বর এমন এক জায়গা যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই শক্তিশালী যে, কোনও কিছুই এমনকি আলোও পড়তে পারে না। কৃষ্ণগহ্বরের...

মহাবিশ্ব অতিক্রম করার সময় কি আলো শক্তি হারায়?

আলো হলো তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ। একটি বৈদ্যুতিক তরঙ্গ এবং একটি চৌম্বক তরঙ্গ একত্রিত হয়ে স্থান-কালের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ...