হাজার হাজার বছর ধরে, রাতের আকাশের রহস্য মানুষকে বিমোহিত করেছে। নক্ষত্র কতটা দূরে? আমাদের ছায়াপথ কতটা বিশাল? এই প্রশ্নগুলো সবার মনে ঘুরপাক খায়।
![]() |
সংগৃহীত| ফ্রীপিক.কম |
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী জুড়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছেন। কিন্তু ১৮ শতকের শুরুর আগে পর্যন্ত, এই প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর আমাদের জানা ছিল না।
এই রহস্যের সমাধানে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রিডরিখ বেসেল। ১৮৩৮ সালে, তিনি ’61 Cygni’ নামক নক্ষত্রের দূরত্ব পরিমাপে সফল হন।
ছয় মাস ধরে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নক্ষত্রটির অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে, পৃথিবীর গতিবিধি বিবেচনা করে তিনি গণনা করেন যে, 61 Cygni পৃথিবী থেকে প্রায় ১০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। নক্ষত্রের দূরত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটি ছিল প্রথম সফল পরিমাপ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী ঘটনা।
এই অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনে বেসেল যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন তার নাম ‘প্যারালাক্স’। এই পদ্ধতিটি আসলে খুবই সহজ। ত্রিকোণমিতির জ্ঞান থাকলে যে কেউই এ পদ্ধতি ব্যবহার করে চাঁদ, এমনকি সূর্যের দূরত্বও পরিমাপ করতে পারবে।
প্যারালাক্স কি বোঝার জন্য চলো সহজ একটা পরীক্ষা করি। তোমার সামনে হাত সোজা করে ধরো। এবার বুড়ো আঙুল উঁচু করে ডান চোখ দিয়ে তাকাও, তারপর বাম চোখ খুলে আবার তাকাও। তোমার আঙুল একটু সরে গেছে মনে হচ্ছে, তাই না?
এই দৃশ্যমান পরিবর্তনই হলো ‘প্যারালাক্স’। অর্থাৎ দুটি ভিন্ন অবস্থান থেকে পর্যবেক্ষণ করলে কোনো বস্তুর দৃশ্যমান অবস্থানের পরিবর্তনকেই বলা হয় প্যারালাক্স।