
Table of Contents
চাঁদ আমাদের অতি পরিচিত এবং একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ যা সর্বদা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। চাঁদ ব্যাসের দিক দিয়ে পৃথিবীর চেয়ে প্রায় চারগুণ ছোট এবং এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অনেক দুর্বল, যে কারণে মহাকাশচারীরা ট্রাম্পোলিনের মতো এর উপর দিয়ে লাফিয়ে বেড়ায়। কিন্তু যদিও আমাদের চাঁদ তুলনামূলকভাবে ছোট, তবুও এটি আমাদের গ্রহের উপর একটি বড় প্রভাব ফেলে। চাঁদের কারণেই আমাদের সমুদ্রে জোয়ার-ভাটা হয় এবং এটি পৃথিবীর ঘূর্ণনের জন্যে সাহায্য করে , যার ফলে আমাদের দিন এবং ঋতুর দৈর্ঘ্য একই থাকে। এখন প্রশ্ন হলো, চাঁদ কিভাবে তৈরি হলো?
চাঁদ কিভাবে তৈরি হয়েছিল?
সৌরজগতের জন্মের অনেক পরেই, প্রায় ৪.৪ বিলিয়ন বছর আগে চাঁদের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় পৃথিবীর পুরাতন গ্রহের কাছে অনেক বিশাল মহাকাশ শিলা উড়ছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে ‘থিয়া’ নামক একটি বিশাল বস্তু প্রাচীন পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল। এই সংঘর্ষের ফলে আমাদের পৃথিবীর কিছু অংশ গলে যায় এবং আমাদের গ্রহের বায়ুমণ্ডল ধ্বংস হয়ে যায় , এই সংঘর্ষের ফলে সেই উপাদান তৈরি হয়েছিল যা অবশেষে চাঁদের জন্ম দেয়। চাঁদ মানব ইতিহাস জুড়ে আমাদের সাথে ছিল, চাঁদের ল্যাটিন শব্দ হলো “লুনা”, এবং ইংরেজি শব্দ “লুনার” এই শব্দ গুলো থেকে এর উৎপত্তি। গ্রীক ভাষায়, সেলিন হলো একটি পৌরাণিক চন্দ্র দেবীর নাম, যা “সেলেনোলজি” বা চাঁদের শিলা।

চাঁদ কী দিয়ে তৈরি?
চাঁদের বেশিরভাগই লোহা(Fe) এবং ম্যাগনেসিয়াম(Mg) জাতীয় পাথর দিয়ে তৈরি। চাঁদের মুখ গর্ত দিয়ে ঢাকা, এই গর্ত তৈরি হয়েছে, চাঁদে আঘাত করা বিভিন্ন মহাকাশযানের কারণে। আর যেহেতু চাঁদের এই দাগগুলো মুছে ফেলার জন্য বাতাস নেই, অথবা ভূত্বকের প্লেটগুলো যা ডুবে যায় এবং গ্রহের কেন্দ্রে বিভিন্ন পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য বহন করে, তাই দাগগুলো চারপাশে লেগে থাকে। চাঁদের অন্য দিকে দক্ষিণ মেরু-আইটকেন অববাহিকা রয়েছে – ১,৫৫০ মাইল (২,৫০০ কিমি) প্রশস্ত এবং ৮ মাইল (১৩ কিমি) গভীর একটি বিশাল গর্ত। বিজ্ঞানীরা এখনও এটি কীভাবে তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে মাথা খাটিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁদে বিশাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যাকে ল্যাটিন ভাষায় “মারিয়া” বা “সমুদ্র” বলা হয়, কারণ একসময় এগুলোকে জলাশয় বলে মনে করা হতো। যখন লাভা চাঁদের পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল, তখন এই অঞ্চলগুলো কোটি কোটি বছর আগে চাঁদের ভূত্বক থেকে খোদাই করা হয়েছিল। যদিও আমরা জানি যে মারিয়া আসলে জলাশয় নয়, চাঁদের মেরুতে অন্ধকার অঞ্চলে অল্প পরিমাণে জল থাকতে পারে। ধূমকেতুর মতো, চাঁদেও রয়েছে। উল্কাপিণ্ডের আঘাতে চাঁদের মাটি থেকে বিস্ফোরিত সোডিয়াম(Na) পরমাণু দিয়ে তৈরি এবং তারপর সূর্যের রশ্মির দ্বারা লক্ষ লক্ষ মাইল দূরে ঠেলে দেওয়া হয়। পৃথিবী কখনও কখনও এই লেজটিকে স্কার্ফের মতো পরে।