বঙ্গাব্দ
© Mehrab360

ভিক্ষা করেও আত্মসম্মানবোধ তৈরি করা যায়

© Mehrab360


রেল(caps) ষ্টেশনে একটি ভিক্ষুক ভিক্ষা করছিল। তার সামনে ভিক্ষার ঝুলিতে ছিল এক বাণ্ডিল পেন্সিল। এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ট্রেনে ওঠার আগে তার ঝুলিতে একটি ডলার ফেলে দিয়ে কিছুক্ষণ পরে কী ভেবে কয়েকটি পেন্সিল তুলে নিয়ে বললেন, "এক ডলারে এই কয়টা পেন্সিল পাওয়া যাবে। তুমিই বা এমনি ডলারটা নেবে কেন, আমিই বা দেব কেন?" এই বলে লোকটি ট্রেনে উঠে চলে গেলেন।

(toc) #title=(বিষয়বস্তু সারণি)






ছয়মাস পরে সেই কর্মকর্তার সঙ্গে ভিক্ষুকটির আবার দেখা হোল একটি পার্টিতে। এবার ভিক্ষুকটি স্যুট-টাই পরে রীতিমত এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। সেই কর্মকর্তাকে চিনতে পেরে তার কাছে গিয়ে বললেন, "সম্ভবত আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না।" তারপর স্টেশনের ঘটনাটি বলতে কর্মকর্তা পূর্বতন ভিক্ষুককে চিনতে পারলেন। জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি এখানে কি করছেন?" পূর্বতন ভিক্ষুকটি জবাব দিলেন, "আপনি সম্ভবত বুঝতে পারেন নি আপনি আমাকে কি শিক্ষা দিয়েছেন। আমার আত্মমর্যাদাবোধ ফিরিয়ে দিয়েছেন। আপনি বলেছিলেন, 'পেন্সিল গুলোর দাম এক ডলারই হবে, তাই একডলার দিয়ে পেন্সিল গুলি নিয়েছিলেন'। এই কথাশুনে আমি ভাবলাম ভিক্ষা করে আত্মসম্মান নষ্ট করে আমি কিলাভ করছি! এর থেকে জীবনে গঠনমূলক কিছু করা ভালো। ভিক্ষার ঝুলি গুটিয়ে নিয়ে আমি কাজ করতে শুরু করলাম। তার ফলে আজ এই অবস্থায় পৌঁছেছি। আপনাকে ধন্যবাদ আপনি আমার আত্মমর্যাদাবোধ ফিরিয়ে দিয়েছেন; ফলে আমার জীবনে পরিবর্তন এসেছে।" ভিক্ষুকটির আত্মমর্যাদা বোধ উদ্দীপ্ত হল বলেই তার চিন্তা, কর্মপন্থা ও কর্মদক্ষতাতেও পরিবর্তন এল। জীবনে আত্মমর্যাদাবোধ ম্যাজিকের ন্যায় কাজ করে।


সহজ কথায়, নিজেদের সম্পর্কে আমরা যা ভাবি সেইটিই হোল আত্মমর্যাদা বোধ। নিজেদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা আমাদের সমস্ত কাজকর্মকে, পারস্পরিক সম্পর্ককে, মাতাপিতা হিসাবে আমাদের দায়িত্ববোধকে এমনকি জীবনে চরিতার্থতা লাভ পর্যন্ত সমস্ত কিছুকেই প্রভাবিত করে। উন্নত আত্মসম্মান বোধ সুখী, পরিতৃপ্ত এবং অভীষ্ট লাভে উদ্যোগী জীবন যাপন সম্ভব করে। নিজের যথার্থ গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন না হলে আত্মসম্মানবোধ বাড়ে না। ইতিহাসের মহান বিশ্বনেতা ও আচার্যরাও এই কথাই বলেছেন যে অন্তরের প্রেরণা ব্যতীত সফল হওয়া যায় না।


আত্মসম্মানবোধঃ

১. বিশ্বাসকে দৃঢ় করে।

২. দায়িত্বগ্রহণে ইচ্ছুক করে।

৩. আশাবাদী মনোভাব গড়ে তোলে।

৪. মানুষের সঙ্গে উন্নততর সম্পর্ক সৃষ্টিতে এবং পরিপূর্ণ জীবন যাপনে সাহায্য করে।

৫. অন্যের প্রয়োজন সহজে অনুধাবন করে, তার প্রতি একটি সযত্ন সাহায্যের মনোভাব প্রদর্শন করে।

৬. নিজের মধ্যথেকেই নিরন্তর কর্মপ্রেরণা লাভ করে এবং মানুষকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী করে।

৭. নতুন সুযোগ গ্রহণের এবং কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার মানসিকতা তৈরি করে।

৮. কাজের মানোন্নয়ন ঘটে এবং ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়।

৯. মানুষকে কৌশলী স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে সমালোচনার মুখোমুখি হতে এবং অভিনন্দন গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
(full-width)

{fullWidth}
© Mehrab360